জিহ্বা থেকে রক্তপাত
জিহ্বা থেকে বিভিন্ন কারণে রক্তপাত হতে পারে।রোগীর সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে জিহ্বা থেকে রক্তপাতের কারণ নির্ণয় করতে হবে। সর্বপ্রথম দেখতে হবে রোগীর মুখের অভ্যন্তরে কোনো ধারালো দাঁত আছে কিনা। ধারালো দাঁত থাকলে সেটির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জিহ্বার উপরিভাগের আবরণের কাছাকাছি কোনো ক্ষুদ্র রক্তনালি যদি থাকে তাহলে সেখানে যখন চাপ প্রয়োগ হয়, তখন সে স্থান থেকে রক্ত বের হতে পারে। তবে এটি খুব কম ক্ষেত্রেই হতে পারে। রোগী হিসেবে জিহ্বার ওপর রক্ত দেখলেই এমন কথা বলা ঠিক হবে না যে, জিহ্বা থেকে রক্ত বের হয়েছে। মাড়ি রোগের ক্ষেত্রে লালার সঙ্গে রক্ত মাঝে মাঝে দেখা যেতে পারে।
এন্টি কোয়াগুলেন্ট (যেসব ওষুধ রক্ত জমাট হতে বাধা প্রদান করে) জাতীয় ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলেও জিহ্বা থেকে রক্তপাত হতে পারে। অনেকের রক্ত জমাট বাঁধার রোগ থাকে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ না করলে জিহ্বা থেকে রক্ত বের হতে পারে।
জিহ্বা থেকে রক্ত বের হলে দেখতে হবে রোগীর দাঁত কামড়ানোর অভ্যাস আছে কিনা। অনেক সময় দেখা যায়, কারও কারও ধাতব পিন বা এ জাতীয় কোনো কিছু চোষা বা কামড়ানোর অভ্যাস রয়েছে, সেক্ষেত্রে জিহ্বা থেকে রক্তপাত হতে পারে।
জিহ্বার ক্রমাগত আলসার থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। যথাযথ চিকিৎসার অভাবে এক্ষেত্রে জিহ্বা থেকে রক্ত বের হতে পারে। আমাদের দেশে জিহ্বায় ছত্রাক সংক্রমণ একটি অতি পরিচিত সমস্যা। জিহ্বায় ছত্রাক বা ফাঙ্গাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে জিহ্বা থেকে রক্ত বের হতে পারে। জিহ্বায় ছত্রাক সংক্রমণের চিকিৎসা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যথার্থ হয় না বিধায় সংক্রমণ বার বার দেখা যায়। এছাড়া অনেক সময় মুখস্থ একই মলম বার বার জিহ্বায় প্রয়োগ করার কারণে সহজে রোগ ভালো হয় না। বরং নানাবিধ জটিলতার সৃষ্টি হতে থাকে।
অনেকের জিহ্বায় বা মুখে মিশ্র সংক্রমণ থাকার কারণে রোগটি জটিল আকার ধারণ করে। তাই এসব রোগের ক্ষেত্রে যথাসময়ে সুচিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে জিহ্বায় রক্তপাত থেকে শুরু করে যে কোনো ধরনের জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে।
লেখক : মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ, ইমপ্রেস ওরাল কেয়ার, বর্ণমালা সড়ক, ইব্রাহিমপুর, ঢাকা
Post a Comment